অভয়নগরে ভৈরব উত্তর -পুর্ব অঞ্চলে শশার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি।

- আপডেট সময় : ১২:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ কামাল হোসেন,বিশেষ প্রতিনিধি
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ভৈরব উত্তর পুর্ব অঞ্চলে ও দক্ষিণ নড়াইলে শশাসহ সকল প্রকার সবজি চাষীদের মুখে হাসি। তাদের এ মুখের হাসির কারণ, যদিও এ বছর আবহাওয়া চাষীদের অনুকূলে নয়, নেই বৃষ্টি শুধুই রোদ। ঘেরের পাড়ে কাঁচা তরকারির ফলন এবার অন্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো। এই অঞ্চলের মাছের ঘেরগুলোর পাড়ে শশা চাষে অধিক লাভবান চাষীরা। শশার বাজার যেন চাষীদের আনন্দ মেলা। বেশ দামে বিক্রয় করছে উৎপাদনকারী আর মাঝখান দিয়ে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্থতায় থাকা মানুষগুলো।
গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার সকালে সরেজমিনে, এসব অঞ্চলের বড়াল, মালাধরা ও হরিশপুর শশার বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি মন শশা বিক্রি হচ্ছে ১৫’ শ-২৫’ শ টাকায়। যা কেনা হচ্ছে চাষীদের কাছ থেকে এবং চাষীরা তাতে সন্তুষ্ট। আবার যারা এখান থেকে কিনে রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে পাঠাচ্ছে তাদেরও লাভের অংশে কমতি নেই। হরিশপুর বাজারে শশা বিক্রি করতে আসা শশা চাষী জাহিদুল ইসলাম বলেন,তার প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ঘের তার পাড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০-১৫ মন শশা উঠছে, তা দেড় মাস ধরে চলবে, যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে। বর্ণী মোড় বাজারে শশা বিক্রি করতে শুভরাড়া ইউনিয়নের লেবুগাতি গ্রাম থেকে আসা তরুণ কুমার জানান, প্রতিটি ঘেরের পাড় হতে গড়ে ৮/৯ মন শশা প্রতিদিন উঠছে এবং দামও মিলছে বেশ। তবে তার আশে পাশে কোনো বাজার না থাকায় প্রায় ১০ কিমি রাস্তা পাড়ি দিয়ে আসতে হয় শশা বাজারে।পরিবহন ব্যবস্থাও তেমন সুবিধাজনক নয়।
অভয়নগর ও নড়াইল সীমান্ত সংলগ্ন বর্ণীর মোড় শশার হাটের ক্রেতা মো: মাহাবুর মোল্লা জানান, এই বাজার হতে প্রায় প্রতিদিন ১০/১২ ট্র্যাক শশা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়, প্রতি ট্র্যাকে প্রায় ১৫০/১৬০ মন শশা থাকে। এবার শশার ফলন এবং মান দুটোই ভাল। যেমন দাম দিয়ে ক্রয় করা হচ্ছে তেমনি চড়া দামেই শশা পৌঁছাচ্ছে মোকামে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য শশা কিনে দিনের মধ্যেই মোকামে পৌছানো সম্ভব হচ্ছে। হরিশপুর বাজারের শশা ক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, পাথালিয়া, হরিশপুর, কোদলা, কামকুল, শিমুলিয়া থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭/৮ ট্র্যাক শশা এই বাজরে আসে এবং তা বিভিন্ন মোকামে পৌঁছে যায়।
জানা যায়, প্রত্যেক তরকারি হাটে প্রায় ১৫০-২০০ জন শ্রমিক কাজ করে। তারা প্রতিদিন সকালে আসে আর দুইটা পর্যন্ত শশা প্যাকিং করে গাড়িতে তুলে দেয়। জনপ্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা আয় এখন এই দিনমজুরদের জীবন চলছে বেশ ভালই। কাজ শেষে বাজার করে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছে তারা।
এদিকে, বর্ণী মোড়স্থ হাটটিতে ক্রয়বিক্রয়ের জন্য রাস্তার দুই পাশ ব্যবহৃত হওয়ায় যাত্রীদের রাস্তা চলাচল ব্যহত হচ্ছে। সকাল ৯ টা থেকে শুরু করে দুপুর দুইটা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে যাত্রীদের ঝামেলা পোহাতে হয়। ভাড়ায় চালিত মটর বাইক চালক জানান, তারা ব্যস্ত থাকলেও তাদের চলাচলের রাস্তা ব্যবহার করেই চলছে শশার হাট। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এমন অবস্থা বিরাজ করছে। তবে নড়াইল টু শংকরপাশা বাস চলাচল আপাতত বন্ধ থাকায় যানজট হলেও ছোট যানবাহনগুলো সহজেই চলাচল করতে পারছে।